ড্রপ-শিপিং করে ঘরে বসেই রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করার সুযোগ, ড্রপ-শিপিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

ফ্রিল্যান্সিং জগতে আমরা বিভিন্ন অনলাইন আয়ের সেক্টর চিনি। তবে আমরা কয়জন এই ড্রপশিপিং dropshipping সম্পর্কে জানি? জানবোই বা কিভাবে! এটি একটি অনলাইন ব্যবসার নাম। বাংলাদেশে এতোদিন তো এটি তেমন একটা জনপ্রিয় ছিলো না। তবে বর্তমানে বিভিন্ন নতুন সুযোগ সুবিধার বদৌলতে এই ড্রপশিপিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার ফলে আমরা আজকে আলোচনা করবো ড্রপশিপিং বিজনেস কী? এবং ড্রপশিপিং বিজনেস এর A টু Z গাইডলাইন। আজ আমরা আলোচনা করবো ড্রপশিপিং ব্যবসা কি এবং এটি কিভাবে করে, ড্রপশিপিং কীভাবে কাজ করে, এই ব্যবসা কিভাবে শুরু করা যায়, বর্তমানে আপনি কেন ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করবেন, ড্রপশিপিং ব্যবসা করতে কি কি দরকার এবং এর সুবিধা – অসুবিধা সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করি।

ড্রপশিপিং বিজনেস কি?

যারা নতুন শুনেছেন তাদের কাছে ব্যাপারটি কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। একেবারে নতুনেরাও যাতে ব্যাপারটি বুঝতে পারেন ঠিক সেভাবেই আজকের আর্টিকেলটিকে সাজানো হয়েছে। সুতরাং সোজা কথায় কারো কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে তা সাপ্লায়ারের কাছ থেকে কেনার পাশাপাশি অর্ডারকারীকে পন্যটি সরবরাহ করাই আসলে ড্রপশিপিং ব্যবসা।

এক্ষেত্রে আপনাকে নিজের স্টোরে  প্রোডাক্টের ইনফো অর্থাৎ আপনাকে আপনার পন্যের সকল বিস্তারিত রাখতে হবে। এরপর কাস্টমার যদি আপনার স্টোরে ঢুকে সেই প্রোডাক্টটি কিনতে অর্ডার করে তখন আপনি একজন সাপ্লায়ারের নিকট থেকে উক্ত পন্যটি কিনে কাস্টমারকে ডেলিভারি করবেন। মূলত এই প্রসেসটিই হলো ড্রপশিপিং। এই সেক্টরে কিন্তু লসের চাইতে লাভের পরিমাণ বেশি। সুতরাং আপনিও চাইলে শুরু করতে পারেন। dropshipping in bangladesh এই বিষয়ে আর বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন ।

ড্রপশিপিং কীভাবে কাজ করে?

ড্রপশিপিং করতে হলে আপনাকে আগে সাপ্লায়ার/উৎপাদনকারীর সাথে একটা চুক্তি করে নিতে হবে। যার ফলে আপনার নিজের কাছে পণ্য না থাকলে অর্ডার আসলে নির্দিষ্ট পণ্য সরাসরি কাস্টমারের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। সাপ্লায়ার/উৎপাদনকারীর যে পণ্যগুলো নিয়ে আপনি কাজ করতে চাইছেন সেসব পণ্য সাজিয়েছে আপনাকে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে হবে (যেখানে কাস্টমার সেসব পণ্যের অর্ডার করতে পারবে তবে ওয়েবসাইট ছাড়াও ফেইসবুক এর মাধ্যমে অর্ডার নিতে পারবেন।)।

যখনই আপনার সেই ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কোনো কাস্টমার অর্ডার আসবে তখনই আপনি সেই অর্ডার ডিটেইলস আপনার আগে থেকে ঠিক করা সাপ্লায়ার/উৎপাদনকারীকে জানিয়ে দিবেন। তারা সেই প্রোডাক্ট প্যাকেজ করে কাস্টমারের কাছে পাঠিয়ে দিবে।

কেন ড্রপশিপিং ব্যবসা করবেন?

একদম বাংলা কথায় সেলারেরা নিজের খচর বাঁচিয়ে ইনকাম জেনারেট করতে ড্রপশিপিং এর ব্যবহার করে থাকে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ড্রপশিপিং এর বেশ কিছু সুবিধা বিদ্যমান। বিশেষ করে বাড়তি খরচ থেকে মুক্ত থাকা। 

মনে রাখবেন, ড্রপশিপিংয়ে লক্ষ লক্ষ ডলার বিনিয়োগের দরকার নেই বলেই যে এর ইনকাম একেবারেই হয় না কিংবা ক্যারিয়ার গড়া যায় তা কিন্তু ভুল ধারণা। এই সেক্টরে যারা স্যাটেল কেবল তারাই এর মজা বুঝেছে। সুতরাং চলুন এই পর্বে আমরা কেন ড্রপশিপিং ব্যবসা করবেন তা নিয়ে গবেষণা চালানো যাক। 

কোনো ইনভেস্টমেন্ট নেই

ড্রপশিপিং বিজনেসে কোনো ইনভেস্টমেন্টের দরকার নেই। যেহেতু আপনি এখানে মোটামুটি একজন রিসেলার হিসেবে কাজ করছেন সেহেতু আপনার নিজের কাছে কোনো প্রোডাক্ট থাকার বা স্টক করার দরকার নেই। যখনই আপনার সাইটে বা আপনার কাছে কোনো প্রোডাক্টের অর্ডার আসবে তখনই আপনি তা আপনার সাপ্লায়ের কাছে জানাবেন। তারা নিজেরাই প্রোডাক্ট প্যাকেজিং করার পর তা কাস্টমারকে পাঠিয়ে দিবে। যার ফলে আপনার কোনো ইনভেস্ট করতে হবে না। 

কোনো ঘর/জায়গা লাগবে না

ড্রপশিপিংয়ে ড্রপশিপারকে কোনো প্রোডাক্ট স্টক করতে হয় না। ফলে এই বিজনেস করতে কোনো ঘর/জায়গা লাগবে না। দেখা যায় জমা রাখার ফলে অনেক প্রোডাক্টের ক্ষতিও হয়ে যায়।এক্ষেত্রে আপনাকে এই লস গুনতে হবে না। পাশাপাশি প্রোডাক্ট জমা রাখতে যে অর্থ খরচ হতে পারতো তা নিয়েও সেলারকে ভাবতে হবে না।

ড্রপশিপিং বিজনেসে যেহেতু একজন সেলারের কোনো প্রোডাক্ট স্টোর করতে হয়না সেহেতু প্রোডাক্ট সেল করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থানে প্রোডাক্ট জমায়েত করতে হয় না বলে আলাদা কোনো ঝামেলাই নেই। সুতরাং স্টকের ঝামেলা থেকে বাঁচতে হলেও ড্রপশিপিং বিজনেস পারফেক্ট বলে আমরা মনে করি। 

এটি অনলাইন বিজনেস

ড্রপশিপিং পুরোপুরি অনলাইন ভিত্তিক বিজনেস বলে অফলাইনের কোনো ঝামেলা নেই। যার ফলে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে লাখ লাখ টাকা গুনতে হয় না। অন্যদিকে অফলাইনে যদি এই বিজনেস করতে হতো তবে আপনাকে অবশ্যই সবার আগে দোকান, তারপর প্রচারণা, স্টক করা এবং প্রোডাক্ট ডেলিভারি করার ঝামেলা পোহাতে হতো। যেহেতু অনলাইনে এই বিজনেস ক্যারি করতে হয় সেহেতু পুরো প্রসেসটিই ঘরে বসে করা সম্ভব।

ড্রপশিপিং বিজনেসের সুবিধাগুলি কি কি?

এতোক্ষণ আমরা ড্রপশিপিং বিজনেসের অসুবিধাগুলি কি কি সে সম্পর্কে জানলাম। চলুন এবার আমরা ড্রপশিপিং বিজনেসের সুবিধাগুলি কি কি সে সম্পর্কে জেনে নিইঃ-

  • যেহেতু প্রোডাক্ট স্টক করা বা অফলাইন মার্কেটিং করা বা তা পরিচালনা করার দরকার নেই, সেহেতু আপনার মাথা খুব একটা হবে না।
  • আপনি যেকোনো পণ্যের অফার দিয়ে প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। যেহেতু আপনাকে খরচ করে প্রোডাক্ট স্টক করতে হচ্ছে না সেহেতু আপনি অর্ডার আসলেই তা সেল করতে পারবেন।
  • একজন ড্রপশিপার হিসেবে আপনাকে পণ্য পরিবহণ এবং প্যাকেজিং সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে না।
  • যেহেতু আজকাল ড্রপ শিপিং ই-কমার্স ওয়েবসাইট বিনামূল্যে শুরু করা যেতে পারে সেহেতু আপনাকে বাজেট নিয়ে খুব একটা চিন্তাভাবনা করতে হবে না।